২০১৪ সালের টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল যেকোনো ভারতীয় দর্শকের কাছেই হতাশাজনক ছিল। সেই ম্যাচের আগে সমগ্র টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা দল ফাইনালে শ্রীলঙ্কার সামনে ভেঙে পড়ে। একটি অন্যতম হতাশাজক ইনিংস খেলেছিলেন যুবরাজ সিং। ২১ বলে তিনি মাত্র ১১ রান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি যখন আউট হলেন, ততক্ষণে ম্যাচের পাল্লা শ্রীলঙ্কার দিকেই ভারী হয়ে উঠেছে। ফাইনালে চার উইকেটের বিনিময়ে ১৩০ রানে থেমে যায় ভারতের ইনিংস। কুমার সাঙ্গাকারার অর্ধশত রানের দৌলতে প্রথমবারের জন্য টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা।
অনেক বিশেষজ্ঞ এবং অনুরাগীরা যুবরাজের ব্যাপক সমালোচনা করেন। বেশ কয়েক বছর পর পাঞ্জাবের এই ব্যাটসম্যান সেই অভিজ্ঞতার ব্যাপারে মুখ খুলেছেন। ৩৮ বছর বয়সী প্রাক্তন খেলোয়াড় বলেছেন, সেই পরাজয়ের সম্পূর্ণ দায় তিনি নিজের কাঁধেই নিয়েছেন। যদিও সেই ম্যাচে অসাধারণ পারফরমেন্সের জন্য শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গার প্রশংসাও করেছেন যুবরাজ। ম্যাচে তিনি খুব ভালো বল করেছিলেন। যুবির কথায়, সেই দিনের সম্পূর্ণ দায় আমি গ্রহণ করছি। সাংবাদিক নিখিল নাজের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে আলাপচারিতার সময় তিনি একথা বলেন। যুবরাজ আরও যোগ করেন, লাসিথ মালিঙ্গা ছয়টি ভালো ইয়র্কার বল করেছিলেন। আমি, কোহলি বা ধোনি, কেউই সেগুলির মোকাবিলা করতে পারিনি।
ভেবেছিলাম আমার কেরিয়ার শেষ: ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ভেবেছিলেন যুবরাজ সিং
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বলেন, সেটা যদি একটা আইপিএল ম্যাচ হত, তাহলে কেউ ওইভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতেন না। তিনি বলেন, উপলক্ষের কারণে মানুষ এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। এত নজরদারি হয়েছিল। এর পাশাপাশি যুবরাজ জানিয়েছেন, ফাইনালের পর তার বাড়িতে পাথর ছোড়াও হয়েছিল। যুবরাজ বলেনন, দুর্ভাগ্যক্রমে সেটা বিশ্বকাপের ফাইনাল ছিল। আমি দেখেছি অনেকেই আইপিএলে ২১ বলে ১১ রান করছেন। তবে আমার ক্ষেত্রে অনেক বেশি নজরদারি করা হয়েছিল। আমার মনে আছে, আমার কেরিয়ারের ব্যাপারেও মন্তব্য করা হয়। আমি বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলাম। নিজেকে ভিলেন মনে হয়েছিল। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরই সংবাদমাধ্যম আমাকে আক্রমণ করে। আমার উদ্দেশ্যে চিৎকার করা হচ্ছিল। এমনকি চণ্ডীগড়ে আমার বাড়িতেও পাথর ছোড়া হয়েছিল।
৩০০ এর অধিক ওডিআই ম্যাচ খেলা এই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আরও বলেন, তার চারপাশে সমস্ত কিছুই তাকে বলে দিচ্ছিল, তিনিই হলেন দোষী। যদিও তিনি সমর্থকদের আচরণে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তার পারফরমেন্সের কথা লোকজন ভুলে গিয়েছেন। এছাড়া তিনি আরও জানান, সংবাদমাধ্যমকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন শচীন তেন্ডুলকর। যুবরাজ সিং বলেন, নিজেকে দোষী মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল কেউ বোধহয় কাউকে গুলি চালিয়েছে। একজন খেলোয়াড় তার কেরিয়ারে ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০১১ বিশ্বকাপ জিতেছেন, তার জন্য প্রাপ্য প্রশংসা পাওয়া যায় না। বরং একটা বিশ্বকাপে হেরে গেলে, সমালোচনার ঝড় বয়ে আসে। অন্যরাও খেলতে পারেননি। তবে ২১ বলে ১১ রান করায় আমার দিকে আক্রমণটা বেশি ধেয়ে আসছিল। আমির মনে আছে, শচীন ট্যুইট করে মিডিয়াকে শান্ত হতে বলেছিলেন।
প্রসঙ্গত, সেই বিশ্বকাপের পরই দল থেকে বাদ পড়েন যুবরাজ সিং। যুবি বলেন, তখনই তিনি মনে করেছিলেন যে তার কেরিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও ২০১৭ সালে কামব্যাক করেন যুবি এবং ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেছিলেন, যেখানে রানার্স আপ হয় ভারত। যুবরাজ বলেন, সেদিন আমি ইন্ডিয়া ক্যাপটা সেই ব্যাটের উপর রেখেছিলাম যেটা দিয়ে আমি ছটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলাম। এবং ভেবেছিলাম, আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে।
Biswajit Manna
News freak, sports enthusiast, translator, amateur writer and avid reader. I live and breathe for Sports!
রিড লিস্ট
- অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হওয়ার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন দানিশ কানেরিয়া
- আইপিএল ২০২০: করোনা থেকে বাঁচতে পাঁচতারা হোটেলের বদলে রিসর্টে থাকতে চায় দলগুলি, অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
- আইসিসির ওডিআই ক্রমতালিকায় শীর্ষস্থান বজায় রাখলেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা
- কেউ বাবর আজমের কথা বলছেন না কারণ তিনি বিরাট কোহলি নন: নাসের হুসেন
- এক ওভারে ৩০ রান দেওয়ার কথা এখনো ভুলতে পারেননি ইশান্ত শর্মা
মন্তব্য