করোনাভাইরাসের কারণ গোটা বিশ্বের জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। চিনে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায়। পরে তা বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। করোনাভাইরাসের প্রকোপে সমগ্র বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ১৬,০০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাস বিস্তারের ফলে বিশ্বের একাধিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা স্থগিত বা বাতিল করতে হয়েছে। অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এবার আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপের ভাগ্য নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) জানিয়েছিল, আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে তাদের দেশে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই ইভেন্টের ব্যাপারে তারা আশাবাদী। কিছুদিন পর একই ইঙ্গিত দিয়েছিল আইসিসি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিদিনই এত মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে টি-২০ বিশ্বকাপ আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ দেখা গিয়েছে।

টি-২০ বিশ্বকাপের সপ্তম সংস্করণ আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হবে বলে নির্ধারিত হয়েছিল। তবে চিন্তার বিষয় হল, অস্ট্রেলিয়াতেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। ক্যাঙ্গারুদের দেশে ইতিমধ্যে ২,০০০-এরও অধিক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জনগণের সুরক্ষার উপর এখন সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। ফলে টি-২০ বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত সিল করা হয়েছে

টি-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে তড়িঘড়ি বৈঠকের আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আগামী ২৯ মার্চ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দেবেন আইসিসি এবং সমস্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বোর্ডের আধিকারিকরা। ভারতের তরফে কে এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ হলেন আইসিসির একজন চিফ এগজিকিউটিভ। তবে তিনি এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন কি না, তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি নিজেই এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়াতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় দেশের সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল অস্ট্রেলিয়া সরকার। অনুমান করা হচ্ছে, এই লকডাউন আগামী ছয় মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হতে পারে। আর তা যদি হয়, প্রবল সঙ্কটে পড়বে আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৯ মার্চ টেলিকনফারেন্স বৈঠকে ১২টি টেস্ট খেলিয়ে দেশের ক্রিকেট প্রধান এবং ১৮ জন বোর্ড সদস্যের উপস্থিতিতে বিশ্বকাপের ভাগ্য নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলতে চাইছে আইসিসি। দুবাইয়ে তিনদিন ধরে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনাভাইরাসের কারণে পরিকল্পনায় বদল আনতে বাধ্য হয় আইসিসি। টুর্নামেন্ট যদি আগামী বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে ২০২১ সংস্করণের সঙ্গে এটির সংঘাত হতে পারে। প্রসঙ্গত, টি-২০ বিশ্বকাপের অষ্টম সংস্করণ আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে। অনুমান করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির জেরে দুটি টি-২০ বিশ্বকাপের মধ্যে যেকোনো একটি বাতিল করা হতে পারে।