বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কিংবদন্তী ক্রিকেটার মাশরফি মোর্তাজা জাতীয় দলের ওডিআই অধিনায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টাইগারদের হোম সিরিজ খেলতে ব্যস্ত। গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তার অবসর নিয়ে নানা জল্পনা দেখা দিয়েছে। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন মোর্তাজা। এই টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে নজির সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ। তবে বল হাতে মাশরফির পারফরমেন্স ছিল খুবই সাদামাটা। তিনি একমাত্র জনি বেয়ারস্টোর উইকেট সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। এছাড়া একাধিক ক্ষেত্রে নির্ধারিত ১০ ওভারের কোটায় বোলিং সম্পূর্ণ করতে পারেনি। ইংল্যান্ডের মেগা ইভেন্টের পর ২০১৯-২০ সংস্করণের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করেছেন মোর্তাজা। তিনি ঢাকা প্লাটুন দলকে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। প্লেঅফে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে পরাজিত হয়েছিল তার দল।

মাশরফি মোর্তাজা – একটি যুগের সমাপ্তি

নিজের কেরিয়ার নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে কিছু সময় চেয়েছিলেন মোর্তাজা। ক্রিকেটের পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনীতিতেও একটি পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন এই বোলার। নির্বাচনে জেতার পর তিনি নড়াইল জেলার সাংসদ হয়েছেন। অনেক বিভ্রান্তির পর জানা যায়, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজের জন্য তাকে বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, এই সিরিজটাই ওডিআই অধিনায়কের শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ হতে চলেছে। ওডিআই সিরিজের আগে এক সাংবাদিকের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন মাশরফি। ওই সাংবাদিক ক্রিকেটারকে প্রশ্ন করেছিলেন, উইকেট তুলতে না পারার জন্য তিনি কি লজ্জিত নন? এই প্রশ্নে মেজাজ হারান মোর্তাজা। তিনি পাল্টা বলেন, নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে তিনি খেলেন না। এর পাশাপাশি তিনি জানান, তিনি চোর নন যে তাকে লজ্জিত হতে হবে। কারণ তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলছেন।

ক্রিকেট দুনিয়ায় যখন প্রথম প্রবেশ করেন, তখন বাংলাদেশের একজন অন্যতম দ্রুত বোলার ছিলেন মাশরফি। তবে বারবার হাঁটুর সার্জারির কারণে তার ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটে। তিনি চেষ্টায় কোনো খামতি রাখেননি। তার কেরিয়ারের একটি উজ্জ্বল দিক হল ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করা। মাশরফি ইস্তফা দেওয়ার মানে হল এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে নতুন অধিনায়কের সন্ধান করতে হবে। আগামী ১ এপ্রিল করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ওডিআই খেলবে বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয় হল পারফরমেন্সের ভিত্তিতে ওই ম্যাচের জন্য তাকে বাছাই করা হয় কি না।