একজন প্রকৃত মোহনবাগান সমর্থককে কয়েকটি বিনিদ্র রাত কাটাতে হতে পারে। কারণ গত ১ জুন থেকে এটিকে-মোহনবাগান পরিবার লিমিটেডের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে ১৩১ বছরের ঐতিহাসিক লোগোর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটছে সবুজ মেরুন শিবিরের। ক্লাবের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনো ঘোষণা করা না হলেও মিলেনিয়াম পোস্টের একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ক্লাবের গেট খুলবে আগামী ১৫ জুন। চ্যাম্পিয়নশিপ মার্চেন্ডাইজের বিক্রয় শুরু হবে ১৬ জুন থেকে। তবে ক্লাবের লোগো পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তের ফলে পৃথিবীজুড়ে থাকা ক্লাবের লক্ষ লক্ষ সমর্থক আঘাত পেয়েছেন।
১৮৮৯ সালে মোহনবাগান ক্লাব স্থাপিত হয়। এটা শুধু কলকাতার একটা ক্লাব নয়, এদেশের ইতিহাসের সঙ্গে মোহনবাগানের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই সমস্ত মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে একটা স্মরণীয় দিন। ওই তারিখেই ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে পরাজিত করে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আইএফএ শিল্ড জয়ী হয়েছিল মোহনবাগান। ১৬ বারের ডুরান্ড, ২২ বারের আইএফএ শিল্ড, ৩০ বারের ক্যালকাটা ফুটবল লিগ জয়ী ক্লাবের সমর্থকদের এবার নতুন স্লোগান সন্ধান করতে হবে।
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর আইএফএ শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে ১২ বার পরাজিত করেছে সবুজ মেরুন শিবির। এর মধ্যে রয়েছে একটি ওয়াকওভার এবং গোলশূন্য ১০টি ম্যাচ। মাত্র একটি ম্যাচে পরাজিত হয়েছিল মোহনবাগান। মিলেনিয়াম পোস্টের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ওই সময়সীমার মধ্যে দুই ক্লাবের মধ্যে মোট ২৩টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। নর্থ আমেরিকান সকাল লিগ ক্লাব নিউইয়র্ক কজমোসের বিরুদ্ধে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান। ওই ম্যাচটি ২-২ স্কোরে ড্র হয়।
১৮৮৯ সালের ১৫ আগস্ট মোহনবাগান ভিলাতে জন্ম নেওয়া এই ক্লাবের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন ভুপেন্দ্রনাথ বসু। মোহনবাগানের লোগোতে থাকা নৌকার মাধ্যমে বাংলার অজস্র নদীর ছবি প্রতিফলিত হয়েছে। ক্লাবের এরকম অনেক সমর্থক রয়েছেন, যারা এই ঐতিহাসিক লোগো সম্পন্ন সবুজ মেরুন জার্সির প্রতি নিজেদের প্রার্থনা অর্পণ করার পর দিন শুরু করেন। এরকমই এক সমর্থক হলেন মার্কিন মুলুকের বোস্টনের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ বোস। মিলেনিয়াম পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষ কিভাবে লোগো বদলে ফেলতে পারেন? এটা ভারতীয় ইতিহাসের অংশ। এই লোগো ছাড়া আমি ক্লাবের জার্সির কথা ভাবতেই পারি না।
অশীতিপর সোমনাথ মুখার্জী সারাজীবন মোহনবাগানের হয়ে গলা ফাটিয়েছেন। মোহনবাগানের এই কট্টর সমর্থক বলেন, ক্লাবের এই লোগো পরিবর্তনের আগে আমি যদি মরে যাই, তবে সেটা ভালো হবে। আমি মান্নাদা (শৈলেন মান্না) এবং চুনীকে (গোস্বামী) খেলতে দেখেছি। ক্লাবের বিশাল লন, যেখানে ১৯১১ সালের ঐতিহাসিক দলের অন্যতম সদস্য সুধীর চ্যাটার্জী, গোষ্ঠ পাল এবং বলাই চ্যাটার্জী আসতেন, আমরা সেখানে বসতাম। প্রত্যেক সন্ধ্যায় আমরা আলাপচারিতায় মেতে উঠতাম। এটা একটা ফুটবল ক্লাব নয়। এটা একটা প্রতিষ্ঠান।
মোহনবাগানের সমর্থকদের তালিকায় অনেক নামী তারকাও রয়েছেন। এদের কয়েকজন হলেন উত্তম কুমার, কমল বসু, সোমনাথ চ্যাটার্জী, সিদ্ধার্থ রায়।
Biswajit Manna
News freak, sports enthusiast, translator, amateur writer and avid reader. I live and breathe for Sports!
রিড লিস্ট
- অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হওয়ার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন দানিশ কানেরিয়া
- আইপিএল ২০২০: করোনা থেকে বাঁচতে পাঁচতারা হোটেলের বদলে রিসর্টে থাকতে চায় দলগুলি, অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
- আইসিসির ওডিআই ক্রমতালিকায় শীর্ষস্থান বজায় রাখলেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা
- কেউ বাবর আজমের কথা বলছেন না কারণ তিনি বিরাট কোহলি নন: নাসের হুসেন
- এক ওভারে ৩০ রান দেওয়ার কথা এখনো ভুলতে পারেননি ইশান্ত শর্মা
মন্তব্য