অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলীর জেরে আপাতত থমকে রয়েছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়া। মহামারির আকার নেওয়া করোনাভাইরাসের কারণে সমস্ত ক্রিকেট লিগ বা ক্রিকেট সিরিজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক হয়ে উঠেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই মারণ ভাইরাস প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং ভারত এক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম নয়।

ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধ করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে গত সপ্তাহে জনতা কারফিউ পালন করার কথা ঘোষণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিটের ভাষণে মোদি নাগরিকদের অনুরোধ করেন, তারা যেন রবিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাড়িতে থেকে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে জনতা কারফিউ পালন করেন। সমগ্র দেশ যখন প্রধানমন্ত্রী মোদির কথা অনুযায়ী জনতা কারফিউ পালন করছিল, ঠিক তখনই কিছু ব্যক্তি এটি উলঙ্ঘন করেছিলেন এবং তার ফল তারা ভোগ করছেন। রবিবার অধিকাংশ মানুষ বাড়ির মধ্যে থাকলেও আট জন পুরুষকে মহারাষ্ট্রের কল্যাণ স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়। এবং এর জন্য তাদের ভারী মূল্য প্রদান করতে হচ্ছে। ডেকান হেরাল্ডের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই আটজনের কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজের জন্য পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে ওই আট ব্যক্তি রবিবার দুপুরে কালা তালাও ময়দানে ক্রিকেট খেলছিলেন। এক আধিকারিক বলেন, এই মর্মে তাদের আটক করা হয়েছে। আইপিসির ১৮৮ (সরকারী কর্মী দ্বারা আরোপ করা যথাযথ নির্দেশ অমান্য করা), ২৬৯ (দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ যা জীবনের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টিকারী সংক্রামক রোগ বিস্তার করতে পারে), ২৯০ (বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি) ধারা অধীনে মহাত্মা ফুলে চক থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ওই আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র পুলিশ অ্যাক্ট সর্বোপরি ন্যাশনাল ডিজাস্টার অ্যাক্ট ২০০৫-এর সংস্থান আরোপ করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, থানে পুলিশ কমিশনারেট দ্বারা জারি করা নিষেধাজ্ঞামূলক নির্দেশ অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া তারা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশজুড়ে পালিত জনতা কারফিউ অমান্য করেছেন।

স্তব্ধ ক্রিকেট

মহামারির আকার নেওয়া করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। খেলার থেকে মানুষের সুরক্ষার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করে বিশ্বের বিভিন্ন বোর্ড এই মারণ ভাইরাস প্রতিরোধে হাত মিলিয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মতো দলগুলি তাদের নিজ নিজ সিরিজ বাতিল ঘোষণা করেছিল।

এছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিসিসিআই। পাকিস্তানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় নকআউট স্টেজ শুরু হওয়ার আগেই পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) বাকি ম্যাচগুলি স্থগিত করে দেওয়া হয়।