পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ২০২০ পাকিস্তানের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে একটা বিশেষ ইভেন্ট হয়ে উঠেছিল। কারণ এই প্রথমবার সমগ্র টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগেই তা স্থগিত করতে হয়েছে। পিএসএলের সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল কবে অনুষ্ঠিত হবে সে ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানি ক্রিকেট সমর্থকদের হতাশ হওয়ার পাশাপাশি পিএসএল বাতিল হওয়ায় বিশাল আর্থিক ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং পিএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। দীর্ঘ সময় পর ধীরে ধীরে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরে আসছিল। পিএসএলে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ একদিকে যেমন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সম্পর্কে সমগ্র বিশ্বে একটা ইতিবাচক বার্তা প্রদান করেছে, তেমনি এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে সেদেশের দর্শকদেরও স্টেডিয়াম মুখী করার পাশাপাশি অর্থ রোজগারের একটা পরিকল্পনা নিয়েছিল পিসিবি। কিন্তু শেষ পর্যায়ের ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ায়, পিসিবির সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেল।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর ১৩ মার্চ থেকে রুদ্ধদ্বার স্টেডিয়ামে পিএসএল ম্যাচের আয়োজন করা হচ্ছিল। সিন্ধু এবং পাঞ্জাব প্রদেশের সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বলাই বাহুল্য, এর দরুণ আয়োজকদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কারণ টিকিট বিক্রি বাবদ রোজগার তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। করোনাভাইরাসের আশঙ্কার মাঝে এই টুর্নামেন্ট যাতে দ্রুত শেষ করা যায় তার জন্য টুর্নামেন্টের দিন সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয় পিসিবি। তবে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় অ্যালেক্স হেলসের কোডিভ-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তড়িঘড়ি টুর্নামেন্ট স্থগিত করে দেওয়া হয়।
ক্রিকেট পাকিস্তানের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, পিএসএলের লিগ ম্যাচগুলির বিমা থাকলেও পিসিবি এখনও পর্যন্ত বিমার জন্য ক্লেম দাখিল করতে পারেনি, কারণ গোটা টুর্নামেন্টটাই এখন স্থগিত এবং সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়নি। সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়, শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট বাতিল করা হলেও যে বিমার টাকা পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের (এক্ষেত্রে করোনাভাইরাস) কারণে টুর্নামেন্ট বাতিল হলে বিমার নিয়ম কি, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। টুর্নামেন্টের সম্প্রচারকরাও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
টুর্নামেন্টের সূচী বদল করা সহজ হবে না
এছাড়া ঠাসা ক্রীড়া সূচী ও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের উপলব্ধতার কথা বিবেচনা করে বলতে হয়, আগামী দিনে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ আয়োজন করাও সহজ হবে না। এমন পরামর্শের কথাও শোনা যাচ্ছে যে মুলতান সুলতানসকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেওয়া হোক। তবে সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি এটি মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। আর একটি উপায় হল, পরবর্তী সংস্করণের পিএসএল শুরু হওয়ার আগে ২০২০ সংস্করণের তিনটি ম্যাচ আয়োজন করা। এদিকে করাচি কিংস দলের মালিক সলমন ইকবাল ইঙ্গিত দিয়েছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে পিএসএলের বাকি তিনটি ম্যাচের আয়োজন করা যেতে পারে। পিএসএল ২০১৯-এর আর্থিক অ্যাকাউন্ট নিয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি পিসিবি। তাই টুর্নামেন্টের এবারের সংস্করণের আর্থিক পারফরমেন্স জানার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে।
Biswajit Manna
News freak, sports enthusiast, translator, amateur writer and avid reader. I live and breathe for Sports!
রিড লিস্ট
- তীব্র আর্থিক সঙ্কটে পাকিস্তান সুপার লিগ, কিছু দল বিক্রি হতে পারে: শোয়েব আখতার
- করোনাভাইরাসের আতঙ্কে অবশেষে বাতিল হল পিএসএল ২০২০-এর বাকি ম্যাচ
- পাকিস্তানে খেলতে গিয়ে কখনোই অসুরক্ষিত মনে হয়নি, বললেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার বেন কাটিং
- পিএসএলে করোনাভাইরাস আতঙ্ক: স্টেডিয়ামে প্রবেশের আগে দর্শকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে
- সাসপেন্ড হওয়ার পর এবার উমর আকমলকে পিএসএল ৫-এর চেক ফেরত দিতে বলল পিসিবি
মন্তব্য