২০১৪ সালের ১৮ জুন তারিখটি বাংলাদেশের ক্রিকেট অধ্যায়ের একটি কালো দিন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সংস্করণে অর্থাৎ ২০১৩ সালে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে বিপিএলের দুর্নীতি বিরোধী ট্রাইবুনাল আট বছরের জন্য অধিনায়ক মহম্মদ আশরাফুলকে নির্বাসনে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
এর পাশাপাশি ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ম্যানেজিন ডিরেক্টর শিহাব চৌধুরীকে একই অপরাধের জন্য তিন বছরের পুরানো তারিখ থেকে ১০ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান লোউ ভিনসেন্টকে তিন বছরের জন্য নির্বাসনে পাঠানো হয়। বুকির সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান কুশল লোকুয়ারাছিকে ১৮ মাসের নির্বাসনের শাস্তি দেওয়া হয়। নির্বাসনে যাওয়ার সময়ের ব্যাপারে মহম্মদ আশরাফুল স্বীকার করেছেন যে সেটা তার জীবনের অন্যতম কঠিন সময় ছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এমনকি আত্মহত্যার কথাও তার মাথায় এসেছিল। যদিও হজে যাওয়ার পর তিনি মানসিক শক্তি পেয়েছিলেন। ক্রিকফ্রেনজিকে আশরাফুল বলেন, এক সময়ে মনে হয়েছিল যে আত্মহত্যা করে এই জীবন শেষ করে দেবো। তবে হজ যাত্রার পর আমার চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন ঘটে।
বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক আরও জানান, আত্মহত্যার ভাবনার কথাটা তার শালাকে তিনি জানিয়েছিলেন। এটা শোনার পরই তার শালা তাকে নানাভাবে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনের কথাও বলেছিলেন। ভারতের এই প্রাক্তন ক্রিকেটারও এইরকম খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন। আশরাফুলের কথায়, আমার শালা মোজিবুল আলমের কাছে আমার ভাবনার কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে উপহাস করে সঠিক কাজটি করেছিলেন। তিনি আমাকে বলেন, আহজারউদ্দিনের মতো মহান খেলোয়াড়ও এইরকম কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। জনগণ এবং অনুরাগীরা অসন্তুষ্ট ছিলেন। তবে আমাকে এটার মোকাবিলা করতে হয়েছিল।
স্পট-ফিক্সিংয়ের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পর তার কি অনুভূতি হয়েছিল, সেকথা জানিয়েছেন আশরাফুল। তিনি জানিয়েছেন, তাকে দেখে প্রত্যেকেই অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করছিলেন। এমনকি আমার নিকট আত্মীয়রাও আমার থেকে দূরত্ব বৃদ্ধি করেন। জনসমক্ষে যেতে আমার অনেক অসুবিধা হচ্ছিল। ২০১৬ সালের আগস্টে বিসিবি আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর তিনি কেবলমাত্র বাংলাদেশের ডোমেস্টিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। আশরাফুল বলেন, আমার এখনও মনে আছে, সেটা আমার কাছে কি পরিমাণ মানসিক হেনস্থা ছিল। সবাই জানতে যে আমি একটা অপরাধ করেছি, আমি একটা ভুল করেছি, একটা ম্যাচে গড়াপেটা করেছি। খুব স্বাভাবিকভাবেই আমি সবার চোখে একজন অপরাধী হয়ে উঠেছিলাম। সবাই আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকাতে শুরু করেন। আমার অনেক ঘনিষ্ঠ মানুষ আমার থেকে দূরে সরে যান। কিছু প্রিয় মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। আমি সব সময় ভাবতাম যে এই পরিস্থিতিতে কিভাবে বাঁচব, কিভাবে জনগণের মুখোমুখি হব, আমার পরিবারকে কি বলব, তাদের কি হবে, সামাজিক অপবাদ কিভাবে ঘোচাবো যা আমার পরিবারের উপর এসে পড়বে।
Biswajit Manna
News freak, sports enthusiast, translator, amateur writer and avid reader. I live and breathe for Sports!
রিড লিস্ট
- অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হওয়ার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন দানিশ কানেরিয়া
- আইপিএল ২০২০: করোনা থেকে বাঁচতে পাঁচতারা হোটেলের বদলে রিসর্টে থাকতে চায় দলগুলি, অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
- আইসিসির ওডিআই ক্রমতালিকায় শীর্ষস্থান বজায় রাখলেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা
- কেউ বাবর আজমের কথা বলছেন না কারণ তিনি বিরাট কোহলি নন: নাসের হুসেন
- এক ওভারে ৩০ রান দেওয়ার কথা এখনো ভুলতে পারেননি ইশান্ত শর্মা
মন্তব্য